Tuesday, May 9, 2023

ইসলামী ব্যাংকের  সেলফিন এজেন্টের মাধ্যমে বৈধ ভাবে বিশাল অংকের বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরন করা সম্ভব

ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন এজেন্টের মাধ্যমে বৈধ ভাবে বিশাল অংকের বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরন করা সম্ভব

 




মোঃ মুরাদ হোসেন | ০৯ মে, ২০২৩ইং

"সেলফিন" ইসলামী ব্যাংকের একটি মাল্টি ফাংশানাল এপ । সাধারন অর্থে যে সকল ব্যাংকিং সেবা বুঝানো হয়  যেমন - নতুন একাউন্ট খোলা, টাকা জমা (সি আর এম মেশিনের মাধ্যমে), টাকা উত্তোলন (এটিএম এবং ব্যাংকের শাখা/এজেন্ট থেকে), এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে / অন্য ব্যাংকের একাউন্টে/ বিকাশ/ নগদ-এ টাকা ট্রান্সফার, চেক বই রিকুইজিশন, গোপন নাম্বারে বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরন, ব্যালেন্স দেখা, স্টেটমেন্ট দেখা ইত্যাদি সেবা এই একটি এপের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন বিল দেয়া, টিকেট বুকিং সহ আরো অনেক সুবিধা যুক্ত হয়েছে। এই জন্য সেলফিন এপটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল এপ। 

"বাংলাদেশের ৬৮০০০ গ্রামে যদি ১ লক্ষ সেলফিন এজেন্টের মাধ্যমে এই রেমিট্যান্স সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দেয়া যায় তাহলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সধারন গ্রাহকগণকে কষ্ট করে ব্যাংকের শাখা/এজেন্টে যাওয়া লাগবেনা। ফলে বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা  আহরন যেমন বাড়বে, তেমনি গ্রাহকের কষ্ট লাগব হবে।"

শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা যায় বলে এটি সব শ্রেনীর মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়াও বিদেশ থেকে পার্সপোর্ট দিয়েও রেজিষ্ট্রেশন করা যায়। বর্তমানে কর্মজীবি মানুষ সেলফিন এপের মাধ্যমে বৈদেশিক রেমিট্যান্স সেবা নেয়ার বিষয়ে সাচ্ছন্দবোধ করছেন। কারন ব্যাংকে না গিয়ে সহজেই সেলফিন এপের মাধ্যমে রেমিট্যান্স নেয়া যায়।

ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত এপ্রিল মাসে ১৬৮৩.৫১ মার্কিন ডলার বা ১৭৩.২৭ বিলিয়ন টাকা বিদেশ থেকে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে  সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ইতালী ইত্যাদি রাষ্ট্র থেকে। শুধু সৌদি আরব থেকে এসেছে ২৭৬.১১ মিলিয়ন ডলার বা ২৯৫৪৩.৭৭ মিলিয়ন টাকা। 

এই সৌদি আরব, কুয়েত , কাতার বা ওমানে আমাদের দেশের অনেক প্রবাসী ভাই-বোনের আছেন,  যারা  অল্প শিক্ষিত বা কম পড়া-লেখা জানা,  সহজে পরিবার পরিজনের নিকট রেমিট্যান্স পাঠাতে চান। এই জন্য বিদেশে ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন। 

কিন্তু পল্লী অঞ্চলের রেমিট্যান্স সুবিধাভোগীরা ব্যাংকে আসতে চায় না। আবার অনেকে অল্প টাকার জন্যও ব্যাংকে যেতে চায় না। এই সুযোগে কিছু অসাধু চক্র মোবাইল এপ ভিত্তিক কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে উচ্চ কমিশন নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে তাদেরকে রেমিট্যান্স সেবা দেয়। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকগন প্রকৃত রেমিট্যান্স সেবা থেকে বঞ্চিত হয় এবং বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বঞ্চিত হয়।

বাংলাদেশের ৬৮০০০ গ্রামে যদি ১ লক্ষ সেলফিন এজেন্টের মাধ্যমে এই রেমিট্যান্স সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দেয়া যায় তাহলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সধারন গ্রাহকগণকে কষ্ট করে ব্যাংকের শাখা/এজেন্টে যাওয়া লাগবেনা। ফলে বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা  আহরন যেমন বাড়বে, তেমনি গ্রাহকের কষ্ট লাগব হবে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে এজেন্ট মালিকগন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না তো? না। কোন ভাবেই না। কারন কোন গ্রাহক  সেলফিন এজেন্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স সেবা নিলে সেলফিন এজেন্টকে কমিশন দিতে হবে। কিন্তু ব্যাংকের এজেন্টকে কোন কমিশন দেয়া লাগবে না। ফলে গ্রাহক নিজের স্বাধীন মত রেমিট্যান্স উত্তোলন করতে পারবেন।

এছাড়াও সেলফিন এপের মাধ্যমে এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়া আরো সহজ করা যেতে পারে। যেমন - বর্তমানে QR কোডের অনেক ব্যবহার লক্ষনীয়। একজন গ্রাহক সেলফিন  এপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এটিএম মেশিনের QR কোড স্ক্যান করে রিকুয়েষ্ট পাঠাবে এবং এটিএম সেই রিকুয়েস্ট গ্রহন করে গ্রাহককে বাটন চেপে নিশ্চিত করতে বলবে। সবশেষে OTP নিশ্চিত করার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সারাদেশে সেলফিন এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রেমিট্যান্স সেবা প্রাপ্তি আরো সহজ করবেন। 

লেখক- ব্যাংকার 

murad.dc07@gmail.com